অগ্নি-দূর্ঘটনার সংখ্যা দিন দিন  যেন বাড়ছে।সম্প্রতি আবারও নারায়ণগঞ্জের ফুড ফ্যাক্টরিতে আগুন লেগে অনেক নিরীহ মানুষ  প্রাণ হারিয়েছে ।কারখানার বাইরে ছিল বিক্ষুব্ধ স্বজনদের ভিড়।আশঙ্কা করা হচ্ছে নিহতের সংখ্যা আরও বাড়বে।ইতোপূর্বে এমন আরও অস্বাভাবিক অগ্নি দূঘর্টনা  যেমন -চকবাজারের অগ্নিকাণ্ডে নিহত ব্যক্তিদের স্বজনদের কান্নার জল শুকাতে না শুকাতেই বনানীতে বহুতল ভবনে অগ্নিকান্ড,কমলাপুর গার্মেন্টসের অগ্নিকান্ড – এর ভয়াবহ পরিনতির নজির  আমরা দেখেছি।

আগুন লাগার পেছনে বিভিন্ন কারন রয়েছে- তার মধ্যে অন্যতম প্রধান কারণ-আমাদের অসতর্ককতা।তাই নিরাপত্তাবিধানের জন্য ব্যক্তিগতভাবে যা করণীয় তা আমাদের অবশ্যই পালন করা উচিত।

প্রতিরোধ ব্যবস্থাঃ

  • রান্নার পর চুলা জ্বালিয়ে রাখার প্রবণতা আমাদের অনেকের পরিবারেই দেখা যায়। একটা মাত্র ম্যাচের কাঠি বাঁচানোর জন্য এমনটা করা হলেও, কাজটা কিন্তু ভীষণ ঝুঁকিপূর্ণ। তাই রান্না শেষে চুলা সম্পূর্ণভাবে নিভিয়ে ফেলা দরকার।

তাছাড়া সিলেন্ডারের চুলা ব্যবহারে অধিক সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।ব্যবহারের আগে সিলিন্ডারের লেবেল ও মেটেরিয়াল সেফটি ডাটা শিট (এমএসডিএস) পরে নেয়া উচিত।ফায়ার সার্ভিসের অনুসন্ধান বলছে, সারা দেশে যত আগুন লাগে, তার ১৮ শতাংশ ঘটে চুলার আগুন থেকে।

  • শীতকাল কিংবা বর্ষাকালে মাঝেমধ্যে সারাদিন বৃষ্টি থাকলে বাধ্য হয়েই চুলা জ্বালিয়ে রেখে জামা কাপড় শুকোতে দেয় অনেকেই।এ কাজটি অনুচিত কারণ ঝুঁকিপূর্ন।প্রথমত অমূল্য প্রাকৃতিক গ্যাসের অপচয় হয়, অন্যদিকে অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকিও সৃষ্টি হয়। তাই ভেজা জামাকাপড় চুলার ওপর শুকাতে দেয়া যাবে না।
  • অব্যবহৃত বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম মূল লাইন থেকে বিচ্ছিন্ন রাখতে হবে। এটা খুবই জরুরি। বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট প্রতিরোধে এটা কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
  • ক্ষতিগ্রস্ত বা নিম্নমানের বৈদ্যুতিক তার/ সরঞ্জাম বদলে ফেলতে হবে। কোনোভাবেই এমন যন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না।
  • বজ্রপাতের সময় ডিশ–অ্যানটেনা ও রাউটারের সংযোগ খুলে রাখা উচিত।
  • কোনো যন্ত্রই সারা দিন একটানা চালানো উচিত না। বিশেষ করে এসি চালানোর মাঝখানে বিরতি দেয়া দরকার।
  • মশার কয়েল জ্বালিয়ে নিরাপদ স্থানে রাখব।ধূমপান করে যেখানে সেখানে ফেলা যাবেনা।
  • ফায়ার সার্ভিস, নিকটস্থ পুলিশ স্টেশন, অ্যাম্বুলেন্স ইত্যাদি জরুরি সেবাগুলোর সাথে যোগাযোগের উপায় আমাদের সব সময় প্রস্তুত রাখা দরকার।

দেশে প্রতিদিনেই কোথাও না কোথাও ছোট-বড় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে।সচেতনতা ও কিছু সাবধানতা অবলম্বন করলে আমরা অগ্নি দুর্ঘটনা থেকে বেচেঁ থাকতে পারি।কেননা অগ্নি প্রতিরোধে সচেতনতার কোন বিকল্প নাই।